৪-১ গোলে দ.কোরিয়াকে উড়িয়ে দিয়ে আর্জেন্টিনা ২য় রাউন্ডে

এবারের বিশ্বকাপে প্রথম দল হিসেবে দ্বিতীয় পর্বে উঠে গেল আর্জেন্টিনা। বৃহস্পতিবার ‘বি’ গ্র”পে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে গঞ্জালো হিগুয়েনের হ্যাট্রিকের সুবাদে আর্জেন্টিনা ৪-১ গোলে উড়িয়ে দেয় দক্ষিণ কোরিয়াকে।

এবারের বিশ্বকাপে এটিই ছিল প্রথম হ্যাট্রিক। তবে প্রথমে আর্জেন্টিনা এগিয়ে যায় পার্ক চু ইয়ংয়ের আত্মঘাতী গোলে।

প্রথম ম্যাচের মতো মেসিকে এ খেলায় প্রথম থেকেই অপ্রতিরোধ্য মনে হয়নি। তবে খেলা যতই গড়িয়েছে ততই অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠেছিলেন তিনি। প্রথমদিকে আক্রমণ রচনা করেছেন ডি মারিয়া ও কার্লোস তেভেজ। ম্যাচে দক্ষিণ কোরিয়াকে চেপে ধরতে মোটেও সময় নেয়নি আর্জেন্টিনা। তবে প্রথমদিকে দু’বারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের আক্রমণে খুব একটা তীব্রতা ছিল না।

বিপরীতে কোরিয়া একটু পেছনেই পড়েছিল। শক্তিশালী প্রতিপক্ষের বিপক্ষে রক্ষণাত্মক পদ্ধতিতে খেলতে গিয়ে খেলার ধারই হারিয়ে ফেলেছিল তারা।

টানা আক্রমণ করে যাওয়ার পরও প্রথম গোলের জন্য আর্জেন্টিনাকে অপেক্ষা করতে হয়েছে ১৫ মিনিট পর্যন্ত। আর সেটাও ছিল আত্মঘাতী গোল। ফ্রি-কিক থেকে বল পেয়ে ক্রস করেছিলেন লিওনেল মেসি। দক্ষিণ কোরিয়ার আক্রমণভাগের খেলোয়াড় পার্ক চু ইয়ংয়ের পায়ে লেগে বল ঢুকে যায় নিজেদের জালে।

এ গোলের পর খেলা পুরোপুরি চলে আর্জেন্টিনার নিয়ন্ত্রণে। খেলায় বড় ভূমিকা নেন ডি মারিয়া। সঙ্গে তেভেজ ও মেসি। ২৩ মিনিটে তেভেজের চমৎকার ক্রসে কেউ মাথা ছোঁয়াতে না পারায় আর্জেন্টিনা গোল পায়নি। খানিক পর তেভেজের ফ্রি-কিক পোস্ট ছুঁয়ে বেরিয়ে যায়।

আর্জেন্টিনা দ্বিতীয় গোল পায় ৩২ মিনিটে। কর্নার এলাকা থেকে ফ্রি-কিক নেন মেসি। বদলি খেলোয়াড় বারদিসো মাথা দিয়ে সেই বল ফাঁকায় দাঁড়ানো হিগুয়েনের কাছ পাঠিয়ে দেন। বাকি কাজটা শেষ করতে কোনো ভুল করেননি তিনি।

এর কিছুক্ষণ পর ডি মারিয়ার তীব্র শট দক্ষিণ কোরিয়ার গোলরক্ষক জুং সুং রিয়ং ‘পাঞ্চ’ করে রক্ষা করেন। মেসির একটি শটও বারপোস্টের সামান্য বাইরে দিয়ে চলে যায়।

তবে বিরতির আগে হঠাৎ করেই খেলার ধারার বিপরীতে একটি গোল শোধ করে বসে দক্ষিণ কোরিয়া। আর্জেন্টিনার রক্ষণভাগের খেলোয়াড় মার্টিন ডেমিচেলিসের ভুলে বক্সে বল পেয়ে যান লি চু ইয়ং। সঙ্গে সঙ্গে বল জড়িয়ে দেন তিনি আর্জেন্টিনার জালে।

দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকেই আর্জেন্টিনা চড়াও হয়ে খেলতে থাকে। আক্রমণের তীব্রতাও ছিল প্রচণ্ড। গোলের সুযোগও পেয়েছিল কয়েকটি। তবে গোল না পাওয়ার কারণ কোরিয়ার গোলরক্ষক জুং সুং রিয়ংয়ের অসামান্য দৃঢ়তা।

খেলার ৫০ মিনিটে দারুণ পরিকল্পিত একটি আক্রমণ চালায় আর্জেন্টিনা। তেভেজ বল দেন ডি মারিয়াকে। তিনি সেটি আলতো করে তুলে দেন ছোট বক্সে। কিন্তু হিগুয়েনের হেড অবিশ্বাস্যভাবে রুখে দেন জুং সুং। কয়েক মিনিট পর তেভেজের আরেকটি প্রচণ্ড শট ঠেকান তিনি।

তবে মাঝে-মধ্যেই পাল্টা আক্রমণ করতে কসুর করেনি দক্ষিণ কোরিয়া। ৫৭ মিনিটে ইয়ম কি হুনের দুর্দান্ত শট অল্পের জন্য আর্জেন্টিনার বারপোস্টের বাইরে দিয়ে চলে যায়।

অবশ্য তৃতীয় গোল পেতে আর্জেন্টিনার কোনো সমস্যা হয়নি। আসলে, মেসির পায়ে বল এলেই গোলের একটা সম্ভাবনা তৈরি হচ্ছিল আর্জেন্টিনার। ৭৬ মিনিটে মেসির শট দারুণভাবে ঠেকিয়ে দেন কোরিয়ার গোলরক্ষক। কিছুক্ষণ পর মেসির শট গোলপোস্টে লেগে চলে আসে ফাঁকায় দাঁড়ানো হিগুয়েনের কাছে। অনায়াসে বল জালে জড়িয়ে দেন তিনি।

চার মিনিট পর হিগুয়েন হ্যাট্রিকের মুখ দেখেন। মেসির বাড়ানো বলে হালকা ক্রস করেন বদলি খেলোয়াড় সার্জিও আগুইরো। তাতে মাথা ছুঁইয়ে কাক্সিক্ষত ঠিকানায় পাঠিয়ে দেন হিগুয়েন।

সূত্র:
জোহানেসবার্গ, জুন ১৭ (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)