Jules Verne এর জন্ম ফরাসী দেশের অন্ধ এক দ্বীপ নানতেস এ। সে দ্বীপে ১৮০০ খ্রিস্টাব্দের ৮ ফেব্রুয়ারি জন্ম জুলভার্ণের। প্রাথমিক পাঠ নানতেসের প্রাইমারিতে। তারপর সর্বোচ্চ ডিগ্রি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। আইনে পাশ করে হলেন আইনবিদ।
যোগ্যতা এবং ব্যাবহার গুনে অল্পদিনেই আইন ব্যাবসায় বিপুল খ্যাতি অর্জন করেন, সেইসাথে অর্থও আয় করতে থাকেন। কিন্তু জুলভার্ন তো অন্য দশজনের মত নন। তার মন বিজ্ঞানীসুলভ। নতুন নতুন চিন্তায় তিনি ডুবে থাকেন। দু:সাহসী সমুদ্র অভিযান সম্পর্কে জানার প্রবল আগ্রহ। বিজ্ঞান বিষয়ক বই আর নানা আবিষ্কার সম্পর্কে অনেক কিছুই জানতে চান জুলভার্ন। এই নিরলস সাধনা এবং প্রত্যয় তাকে বিজ্ঞানের কাল্পিক জগতে নিয়ে যায়। অসম্ভব সব কল্পনার পাখায় ভর করে তিনি উড়ে চলেন বিজ্ঞানের বাস্তব আকাশে।
জাদুমাখা তার কলম। কলমের নিব থেকে যা বেরোয় তাই হয়ে ওঠে সত্যের চেয়েও সত্য। কল্পনাতীত কল্পনার আশ্চর্য বাস্তব। সাফ কথায় জুলভার্ন জুলভার্নই। সাইন্স ফিকশানে তিনি অপ্রতিদ্বন্দী লেখক। জুলভার্ন বিজ্ঞানী নন কিন্তু তিনি বিজ্ঞানীদের পথিকৃত সে কথা বলার অপেক্ষা রাখে না। শত বছরের আগের জুলভার্ন কল্পনার কলমে যা লিখেছেন পরবর্তীতে বাস্তব পৃথিবীতে সেই বিজ্ঞান আবিষ্কারটি সত্যে প্রমাণিত হয়েছে।
আজকের অনেক আবিষ্কার তার কলমে বর্ণিত হয়েছে। না তিনি জাহাজে চড়ে সাত সাগর চষে বেড়ান নি.. বিমানে চড়ে পৃথিবীর আয়তন মাপেন নি… বন, উপবন আর পাহাড়ে ঘোরাঘুরি করেন নি.. তিনি যেটা করেছেন সেটা হল নিজের ছোট্ট ঘরে আপন মনে লিখেছেন। কল্পনার রথে চড়ে বেড়িয়েছেন তিনি… কি অচিন্তনীয় কল্পনা শক্তি ছিল তার!
তাঁর মিস্টিরিয়াস আইল্যান্ড অসাধারণ এই কল্পবিজ্ঞান গল্পটি পাঠকের মন আকৃষ্ট করে। এ কাহিনী নিয়ে চলচ্চিত্র হয়েছে। সেই চলচ্চিত্র টিভি দর্শকরা দেখে তন্ময় হয়েছেন, ঠিক বাস্তবেই যেন ঘটছে ঘটনা গুলো!
টুয়েন্টি থাউজান্ড লিগ্স আন্ডার দ্যা সি, এরাউন্ড দ্যা ওয়ার্ল্ড ইন এইটি ডেইজ, দ্যা পারচেজ অফ দি নর্থ পোল, জার্নি টু দ্যা সেন্টার অফ দি আর্থ, ক্যাপ্টেন হ্যাটেরাস, ক্লিপার অফ দি ক্লাউডস, মাস্টার অফ দি ওয়ার্ল্ড, ক্রিসেন্ট অফ দি আইল্যান্ড ইত্যাদি জুলভার্নের শ্রেষ্ঠ কীর্তি।
আশ্চর্য হতে হয় যখন জুলভার্ন বিজ্ঞানী না হয়েও নির্ভুল গনিতবিদ, অভিযাত্রী না হয়েও দু:সাহসী অভিযাত্রী, ভুগোলবিদ না হয়েও ভুগোল সম্পর্কে অসাধারণ জ্ঞান এবং মহাকাশচারী না হয়েও মহাকাশ সম্পর্কে বিজ্ঞান ভিত্তিক তথ্যের পন্ডিত।
ফ্রান্সের জুলভার্ন ১৯০৫ সালের ২৪ মার্চ মৃত্য বরণ করেন। যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাসিয়েন্সয়ে এই আশ্চর্য মহাপ্রাণের প্রাণপ্রদীপ নিভে যায়। কিন্তু নিভে নি তার আলোক রশ্মি…..তা জ্বলছে এবং জ্বলবে…..