আগেই বলে রাখি লেখাটি মাসনুন ভাইয়ের ব্লগ থেকে সম্পূর্ণ কপিপেস্ট করছি। অবশ্য উনার অনুমতি নিয়ে নিয়েছি। সমস্যা নাই!
শ্রদ্ধেয় শামীম ভাই অনেকদিন আগে সচলায়তনে একটি পোস্ট দিয়েছিলেন : লিনাক্স পুরা ফালতু – ব্যবহার করে দিনকে দিন হতাশ হচ্ছি । চমৎকার লেখনীতে তিনি উইন্ডোজের খারাপ দিকগুলো তুলে ধরেছিলেন আর তুলনা করেছিলেন লিনাক্সের সাথে । পোস্টটি নিঃসন্দেহে সুখপাঠ্য ছিল । আজকে আমার এই ব্লগ পোস্টের শিরোনাম শামীম ভাইয়ের লেখার সাথে অনেকখানি মিলে যায় তাই প্রথমেই তাকে স্মরণ করলাম ।
আমি Ubuntu 6.06 LTS ব্যবহারের মধ্য দিয়ে প্রথম উবুন্টু এবং লিনাক্স ব্যবহার করি । হার্ডওয়্যার ইনকম্পাটিবিলিটির কারণে সে যাত্রা অভিজ্ঞতাটা খুব সুখের ছিল না । Ubuntu 8.04 থেকে লিনাক্সের লিমিটেশন মেনে নিয়েই উবুন্টু ব্যবহার করছি । Ubuntu 8.10, 9.04, 9.10, 10.04, 10.10 এবং 11.04 এই প্রত্যেকটা ভার্সনই আমি কমপক্ষে ১ মাস এবং বেশিরভাগ সময়ই ৩-৬ মাস ব্যবহার করেছি । এ সময়ে আমি ইচ্ছা অনিচ্ছায় প্রচুর রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা অর্জন করেছি । কিন্তু কিছুদিন যাবৎ আমি উইন্ডোজ সেভেন ব্যবহার করছি যেটাকে লিনাক্স ব্যবহারকারীরা ব্যাঙ্গ করে “সপ্তম জানালা” বলে থাকেন । গত ৫-৬ মাস ব্যবহার করেই বুঝেছি এই জিনিস চূড়ান্ত ফালতু, যতই দিন যাচ্ছে আরো হতাশ হচ্ছি ।
প্রথমেই বলি ড্রাইভারের কথা । আমার ওয়াইফাই লিনাক্সে পেত না । কত গুতাগুতি করে এই সাইটে ঐ সাইটে ঘুরে কেরামতি করে একটা ড্রাইভার ইনস্টল করছিলাম । কাউকে জিজ্ঞাসা করলে বলে এটা ড্রাইভার ম্যানুফাকচারের প্রবলেম, তাদের বল লিনাক্সের জন্য ড্রাইভার বানাইতে । যেখান থেকে ল্যাপটপ কিনলাম তাদের মারলাম ঝাড়ি, লিনাক্সের জন্য কেন ড্রাইভার নাই । তারা মুখ কাচু মাচু করে বলল এই জিনিসের নামই শোনে নি তারা। তারা আমাকে বুঝাতে চাইল যে অপারেটিং সিস্টেমের ব্যবহারকারী কম তার জন্যে ড্রাইভার বানাতে এবং মেইনটেইন করতে যে খরচ হবে তার তুলনায় ব্যবহারকারীর সংখ্যা নিতান্তই নগন্য । যাই হোক এইসব অযৌক্তিক কথা শোনার টাইম ছিল না । এখানে সেখানে ঘুরে একটার পর একটা ড্রাইভার নামায়ে নামায়ে টেস্ট করতে লাগলাম। শেষ পর্যন্ত একটা ড্রাইভারে কাজ হল । আমার তখন মনে হচ্ছিল এভারেস্ট জয় করে ফেলছি । একটু পরেই দেখি বিধি বাম, ওয়াইফাই কানেক্টেড বাট ডাটা ট্রান্সফার হচ্ছে না । আজও এই প্রব্লেম এর সলিউশন পাইনাই । ড্রাইভার নিয়ে এই ভয় থেকে উইন্ডোজ সেটাপ দিলাম দুরু দুরু বুকে । আমার কাছে সিডিতে উইন্ডোজের ড্রাইভার ছিল, সেটাও গেছে হারিয়ে । ভাবলাম আবারো গুতাগুতি করা লাগবে, এটলিস্ট ম্যানুফ্যাকচারের ওয়েবসাইটে গাদা গাদা ড্রাইভার থেকে আমারটা খুজে নেওয়া লাগবে । কিন্তু উইন্ডোজ আমাকে হতাশ করল । শালার মাইক্রোসফট দেখি উইন্ডোজ আপডেটের সাথে সাথে আমার ওয়াইফাই ড্রাইভার দিয়ে দিছে। আমার রণ প্রস্তুতি বৃথাই গেল ।
ড্রাইভার চুলোয় যাক, ভাবলাম ভাইরাস নিয়ে এবার একটা যুদ্ধ হবেই হবে । ওমা, মাইক্রোসফট সিকিউরিটি এসেনশিয়ালস নামে এক ঘোড়ার ডিম আছে, এই জিনিস ইন্সটল দিতেই আমার হার্ডডিস্কের কোণা কানা থেকে ভাইরাস টেনে টেনে বের করে আনল তারপর আমি কিছু বুঝার আগেই সেগুলো হাওয়া! হায় হায়, আমি তো জানতাম উইন্ডোজ মানেই ভাইরাসের সাথে ক্যানন ফাইট। এইটা কি হইল ? এইটা মাইক্রোসফটরে ফ্রি দিতে কে কইছিল? আজাইরা আকাম!
এরপরে আমার নতুন কেনা নোকিয়া ফোনটারে ব্লুটুথ দিয়া লাগাইলাম। একগাদা সার্ভিস ইন্সটল হয়ে গেল । ফোনের গান পিসি থেকে বাজানো যায়, পিসির হেড ফোন দিয়ে কল দেওয়া যায়, সেই কল আবার রেকর্ডও করা যায় । আবার ইচ্ছামত এপিএন দিয়ে ইন্টারনেটে ঢোকাতো যায়ই, ফোনটারে নেটওয়ার্ক ডিভাইস হিসেবে চালানো যায় । আরো একগাদা জিনিস করা যায় যেগুলো লিনাক্সে ছিল না। লিনাক্সে তো আমার একটা ফাইল ট্রান্সফার করতেই কয়েকবার গুতাগুতি করা লাগত, ড্রাইভারের কথা নাই বা বললাম । একটা ফাইল ট্রান্সফার করেই নিজের বীরপুরুষ মনে হত। উইন্ডোজে দেখি ফোল্ডার সহ পাঠানো যায়, সাথে আবার এফটিপি দিয়ে ফোনের কন্টেন্ট ও ব্রাউজ (সাথে ডিলিট) ও করা যায় । না হতাশ হইলাম এই জানালা নিয়া!
লিনাক্সে টাচপ্যাড দিয়ে স্ক্রোল করা ছিল মারাত্বক রোমাঞ্চকর । উইন্ডোজে দেখি আমার টাচপ্যাডে লাল বাতি জ্বলে । লাল বাতি দেখে একটু এডভেঞ্চারের গন্ধ পাইছিলাম, পরে দেখি টাচপ্যাডের পাশের স্ক্রোলবার তো কাজ করেই সাথে মাল্টিটাচ, জুম আর রোটেশনও কাজ করে । ধুর! উইন্ডোজ নিজে নিজেই আপডেটের সাথে সিন্যাপ্টিক ইন্সটল করে দিছে ।
লিনাক্সে কত মজার মজার 2D গেইম খেলতাম । উইন্ডোজে দেখি সব 3D। গেইমের গ্রাফিক্স দেখে তো মাথা ঘুরায় । নাহ, লিনাক্সের গেইম গুলাই ভাল ছিলা, মাথা ব্যথা হইত না বেশিক্ষন খেললেও ।
আরো হতাশ হইলাম যখন দেখলাম এই জঘন্য জানালা উবুন্টুর চেয়ে ভাল পারফর্ম করছে আমার Celeron D 2GHz 1GB RAM ওয়ালা পিসিতে । উইন্ডোজ যেহেতু প্রোপারেটরি জিনিস, কোডেক পাইতেও সমস্যা নাই । সাধারণ কোডেকগুলো দেওয়াই থাকে, আমার গ্রামীণ ফোনের ডাটা আর খরচ হয় না। ঐগুলা জমায়ে তো আমার কোন লাভ নাই । হায়রে উইন্ডোজ!
এবার আসি পাইরেসীর ব্যাপারে। আমি যদিও ইউনিভার্সিটিতে সব বই ফটোকপি পড়ি তারপরেও যারা পাইরেটেড উইন্ডোজ ব্যবহারকারী ছিল তাদের কে “চোর” বললে নিজেরে কেমন সাধু সাধু মনে হইত । এখন সেই উপায়ও নাই । উইন্ডোজ সেভেন স্টার্টার এর দাম নাকি মাত্র ৪,০০০/= আর ইদানীং নেটবুক, নোটবুক এইগুলানের সাথে জেনুইন উইন্ডোজ দিচ্ছে । শুধু তাই হইলে তো হইছিল । ছাত্র ছাত্রীদের এক গাদা টুলস ফ্রি দিচ্ছে মাইক্রোসফট । মাঝখানে শুনলাম স্মলবিজনেস ওয়ালাদের জন্যেও নাকি ফ্রি দিচ্ছে এগুলো । যারা আলো আসবেই সাইটে মেম্বার তারাও ফ্রী পাইতেছে । চোর কইয়াও শান্তি নাই!
লিনাক্সে কমান্ড বা প্যাকেজের নাম মুখস্ত করে ঝেড়ে দিলেই চলে । কোন দিকে তাকানো লাগে না। কোন নেক্সট নেক্সট করা লাগেনা । আমার ধারণাও হয়না কিভাবে কি ইন্সটল হচ্ছে, কোথায় কি ইন্সটল হচ্ছে । উইন্ডোজে আবার এইগুলো একটু বেশী হয়, সবকিছু জেনে বুঝে নেক্সট বাটন চাপা লাগে । এত জানা বোঝার টাইম কই?
লিনাক্সে কিছু না পারলে এখানে খোজ, ওখানে খোজ । এই কমান্ডের আউটপুট দাও, ঐটার স্ক্রীনশট দাও, কেউ বলবে “hal” ইন্সটল কর, কেউ আবার সেটা নিয়ে হাসাহাসি করবে । এই ফোরামে যাও, ঐ ফোরামে যাও, মাঝে মাঝে ব্যান খাও কিংবা হ্যাক হওয়া ফোরামের ফ্রন্ট পেইজে দুই এডমিনের বিনোদনমূলক ভিডিও দেখ — ব্যাপক মজা । উইন্ডোজে এর ছাই পাশও নাই । ম্যান্দা মারা । সাপোর্ট টিকেট সাবমিট কর । তারা সাপোর্ট দিয়ে দেবে । এইটা কোন কথা হল? কোন কোন গিকি গিকি ভাব নাই, লাইফটারে জীবন বানাইয়া দিল উইন্ডোজ ।
লিনাক্সের কাস্টোমাইজড ডিভিডি আছে, তার আবার কোনটা কোনটা ৬০টাকা দিয়ে কিনে দেখা যায় কাজ করে না । তখন আবার সেইগুলা ফেরত দেওয়া, বিনিময়ে আবার নতুন ডিভিডি নেওয়া । মাঝে মাঝে মেলা হয়, আড্ডা হয় । সেইগুলো কোনটা কার ইভেন্ট ছিল, কোনটা কার ইভেন্ট ছিল না সেইটা নিয়ে টুইটার গরম থাকে । ফোরাম কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়াই স্পন্সর লিস্টে নাম ঢুকায় দেওয়ায় আবার দুই পক্ষের কথা বার্তায় ফোরাম গরম হয় । এইগুলা সবই লিনাক্সের ভ্যালু এডিশন হিসেবে বিবেচনা করা যেত । একটা আকর্ষনীয় অপারেটিং সিস্টেমের সাথে ব্যাপক বিনোদন । উইন্ডোজে আমি স্টীভ বালমারের সেই নাচের ভিডিও ছাড়া এরকম কোন বিনোদন পাই নি । শেইম!
লিনাক্সে আবার মাঝে মাঝে সিস্টেম আপডেট দিলে ম্যানুয়ালি ইন্সটল করা ড্রাইভারগুলো মুছে যেত । আবার সেগুলো নিয়ে মাতামাতি গুতাগুতি করতাম । উইন্ডোজে আপডেটের পর আপডেট দেই, কিচ্ছু ভাঙ্গে না ।
এতদিন উইন্ডোজ ব্যবহার করে আশায় আশায় ছিলাম ব্লু স্ক্রীন অব ডেথ দেখব উবুন্টু যেমন মাঝে মাঝেই চুপ হয়ে যায় আমারে কিছু না বলেই সেরকম কিছু দেখব। জানালা আমাকে হতাশ করেছে । মোটামুটি সব ওপেনসোর্স সফটওয়্যারই উইন্ডোজের জন্য আছে । তাই ক্রাক করার থ্রিলটাও নাই ।
আর কি বলব । এরকম হাজারটা কারণ দেখানো যায় যার কারণে উইন্ডোজ আমাকে প্রতিনিয়ত হতাশ করে চলছে । শেইম অন মাইক্রোসফট, শেইম অন উইন্ডোজ ডেভেলপারস এন্ড ইউজার্স! শেইম!
16 replies on “উইন্ডোজ পুরা ফালতু – ব্যবহার করে দিনকে দিন হতাশ হচ্ছি!”
আসলেই উইন্ডোজ পুরাই ফালতু। ভালো একটা IDE ও নাই। Visual Studio নামের একটা ফালতু জিনিস ব্যবহার করতে হয়। What a shame 😛
Geany কি দোষ করছে! 😛
বলেন কি ? এইটাতো রকিং জিনিস ? VS তো ফাউল 😛
হাহ হাহ হা। চরম 😀
আসলেই 😀 lol!
হা হা পুরাই ফালতু!
হেহে..তা আর বলতে 😉
i read the full story, i like it.
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ
,এটি খুব ভাল সাইট ,যা আমাদের সবার খুব প্রয়োজন ।আপনার সাইট খুব তত্ত্ব ভিত্তিক
এবং সহজ -সরল ভাষায় লিখিত যা সবার বোঝার উপযোগী
তাই আমি সহ আমার বন্ধুরা আপনার সাইট নিয়মিত ভিজিট করিএবং বাসত্মবে কাজে লাগানোর
চেষ্টা করি ।কেন জানি না এই সাইট আমার খুব ভাল লাগে ।আমি চাই আপনি আপনার সাইট নতুনত্ব দিয়ে ভরিয়ে তুলবেন। আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ , আর সময় পেলে আমাদের কম্পিউটার বিষয়ক বাংলা ব্লগ সাইট http://www.pchelpline24.com ভুবনেঘুরে আসবেনএবং সেখানে আপনি ইচ্ছা করলে কমিপউটার
ও ইন্টারনেট বিষয়ক টিপস লিখতে পারে, আমরা আপনার অপেক্ষায় থাকব ।
আমাদের ব্লগ আনুষ্ঠানিকভাবেযাত্রা
শুরু করবে ০১/০৮/২০১১তরিখ থেকে
হা হা হা মজা পাইলাম ভাই ।
অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া…..গুরুত্বপূর্ণ এই পোষ্টের জন্য। আমার মনে হয় আপনার এই নিরদেসনা অনুসরন করলে অনেকেই উপকৃত হবে।
ইনফর্মেশন ও টেকনোলজি বিষয়ে বাংলা ভাষায় তথ্য পেতে ঘুরে আসুন>> http://busybeebd.com/
I am a Lead Generator. I work various market place. If any need knock me. Please visit my Gig — https://bit.ly/2GieoA8
খুব পছন্দের একটি ব্লগ। শুভ কামনা রইলো।
লিনাক্স এর যেকোনো সমস্যার সমাধান পেতে আমাদের সঙ্গে থাকুন
https://pr0zukti.blogspot.com/search/label/LinuxOS
This is a best website for online earning .anyone can very easily learn of online income.i will suggest for everybody in this website if you want to more information click here…http://www.outsourcinghelp.net
thank you
Its nice and helpful to all. Thanks for sharing this type of article. check the link. it will benefited you.
moonmoon74.blogspot.com
Its nice and helpful to all. Thanks for sharing this type of article. check the link. it will benefited you.
http://moonmoon74.blogspot.com