বহু কষ্টের সাথে লেখাটা লিখতে আরম্ভ করেছি। লেখাটি পড়ার পর কেউ আমাকে উচ্চাশাকাঙ্খী, বাংলাদেশ ক্রিকেটের অন্ধভক্তসহ অন্যান্য উপাধী দিলেও আমার কিছু বলার নেই। তবে মনের কিছু কথা আজ না বললেই নয়।
গত ৪ মার্চ ২০১১…বাংলাদেশের ক্রিকেটের এক কাল অধ্যায়। নিশ্চয়ই বাংলাদেশের ক্রিকেটের জন্য সবচেয়ে খারাপ দিন। ক্রিকেট ওয়ার্ল্ডকাপেও অবশ্যই। কিন্তু এই ম্যাচের পর বাংলাদেশী ক্রিকেট ভক্তদের আচরণ দেখে আমি সবচেয়ে অবাক হয়েছি। ক্রিকেট ভক্তদের এরকম রেসপন্স দেখে আমি সত্যিই খুব মর্মাহত হয়েছি। সবাই হয়ত ভাবছেন ‘কেন’? বাংলাদেশ যেরকম খেলেছে সেখানে তো আমারও সবার সাথে মিছিলে নেমে গাড়ি,বাড়ি,দোকানপাট,সাকিবের প্রতিকীতে আগুন জ্বালানো, ভাংচুর করা উচিৎ…কিন্তু না…আমি সেরকম ভাবে জিনিসটা ভাবছি না।
হারার পরই বিভিন্ন ব্লগ এবং ফোরামে বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের যথেচ্ছভাবে গালি গালাজ, টেস্ট স্ট্যাটাস কেড়ে নেওয়া হোক এরকম বক্তব্য আসতে থাকে। উদাহরণস্বরূপ বাংলার তথাকথিত টাইগারদের টেষ্ট স্ট্যাটাস কেড়ে নেয়া হোক। এবং বাংলাদেশ ক্রিকেট দল বনাম ছাগলের ৩ নাম্বার বাচ্চা টপিক দুইটির কথা উল্লেখ করা যেতে পারে।
এছাড়াও বিভিন্নখানে বিভিন্নভাবে প্রতিবাদ করা হয়েছে। তাদের সকলের জন্য আজ আমি বাংলাদেশের সকল ক্রিকেট ফ্যানদের কাছে একটি খোলাচিঠি লিখছি…
বাঙ্গালী হুজুগে মাতাল বলে একটা প্রবাদ প্রচলিত আছে। কথাটি একেবারে মনে হয় মিথ্যে নয়। নাহলে কি করে এক ম্যাচ জিতলে সাকিবের মুখে আপনারা ফুল চন্দন দেন…তামিমের জন্য মিছিল দেন…আর পরের ম্যাচ হারলে তাদেরকে ইট পাথর মেরে এই প্রতিদান দেন?ছিহ!

এরচেয়ে তো ইন্ডিয়ার ভক্তদের বাংলাদেশের ক্রিকেট টিমের প্রতি আস্থা বেশী! কিছু ওয়েবসাইট ঘাটলেই তা বোঝা যাচ্ছে… যেখানে অন্যান্য দেশের ক্রিকেটমোদীরা গঠনমূলক সমালোচনার পাশাপাশি সামনে এগিয়ে চলার রসদ জোগাচ্ছেন সেখানে আমাদের দেশের ক্রিকেটপ্রেমীদের রিফ্লেকশন এই? হায়রে!
আপনি বাংলাদেশের লাস্ট ১২-১৬ মাস দেখুন। তারা কনসিসটেন্টলি ভাল ক্রিকেট খেলেছে। কখনও জয় বা পরাজয় এসেছে। কিন্তু কিভাবে আপনি জয়গুলোকে ঝড়ে বক বলছেন? নিউজিল্যান্ডকে ৪-০ তে হারানো…ওয়েস্ট ইন্ডিজকে টেস্টে হোয়াইট ওয়াশ এগুলো সবই কি ফ্লুক ছিল????
ইন্ডিভিজ্যুয়াল পার্ফরমেন্স হিসেবে তামিম ইকবালের ক্রিকেটের জন্মদাতা ইংল্যান্ডের সাথে তাদেরই ইতিহাসসমৃদ্ধ মাঠ লর্ডস এ পরপর দুই ইনিংসে ১০০ করা কি ফ্লুক ছিল? শফিউলের লাস্ট বলে ইংল্যান্ডকে অলআউট করে ইংল্যান্ডকে হারানো কি ফ্লুক ছিল? ১৭৪ রানে অলআউট হয়েও শেষ ম্যাচে নিউজিল্যান্ডকে হারিয়ে হোয়াইট ওয়াশ করাটা কি ফ্লুক ছিল??? ২০০৯ সালের ৩ নভেম্বর জিম্বাবুয়েকে ৪৪ রানে অলআউট করেছিল বাংলাদেশ! সেটিও ছিল কি ফ্লুক
অনেকেই বলে থাকেন সাকিব আল হাসান বাংলাদেশের অধিনায়কত্বের যোগ্য নয় তাহলে কি ২৩ বছর বয়সে আপনি ১৬ কোটি মানুষের স্বপ্ন নিয়ে মাঠে খেলতে যাবেন? বর্তমানে সাকিব মাঠে যে স্পোর্টসম্যানশিপ আর মাঠের বাইরে স্পোকম্যানশিপের পরিচয় দিয়েছ সেটা সত্যিই অতুলনীয়। সত্যি বলতে কী আমার নগন্য ক্রিকেটিয় বিদ্যায় আমি যা বুঝি যে, বাংলাদেশ খুব ভাল এবং যোগ্য একজন অধিনায়কের হাতে রয়েছে, যে কিনা গত কয়েকমাসে আমাদের বড় বড় স্বপ্ন দেখতে শিখিয়েছে। তার বদৌলতেই আমরা আয়ারল্যান্ডের সাথে ২০৫ রান করেও ম্যাচ জিতে আসতে পারছি…তার বদৌলতেই ১৭৪ রানের স্কোর দিয়েও নিউজিল্যান্ডের মত টিমকে হারিয়েছি …
আপ্নারা কি ভাবছেন জানি না …তবে আমি কখনোই এটিকে ফ্লুক বলব না। বাংলাদেশ ভাল খেলেছে বলেই এইটুকু অর্জন করা সম্ভব হয়েছে।
প্রত্যেক দলেরই খারাপ সময় আসে। কিন্তু সেই সময়ে পড়ে থাকলে তো আর চলবে না। অস্ট্রেলিয়াও কিন্তু কিছুদিন আগে টেস্টে পাকিস্তানের সাথে ৮৮ রানে আউট হয়েছে. তাতে কেউ বলেছে অস্টেলিয়ার টেস্ট স্ট্যাটাস কেড়ে নিবে? বলেনাই,কারণ সবাই জানে অস্ট্রেলিয়া ফিরে আসতে পারে. তেমনি বাংলাদেশও পারে.
হাসলেন?
হাসুন.
অস্ট্রেলিয়ার মতো না হোক বাংলাদেশ নিজেদের সাধ্যমত ফিরে আসুক.
এবং আমার বিশ্বাস তারা ফিরে আসবে…
কেউ বলবেন টাকার কথা,ক্রিকেটাররা অনেক বেতন পান,অনেক ইনকাম ইত্যাদি ইত্যাদি.
আচ্ছা আমাকে বলুন বাংলাদেশের খেলোয়াড়েরা কোন দেশের খেলোয়াড়দের চেয়ে বেশি বেতন পাচ্ছে?
নাকি আমাদের হিংসা হয়! এমন পুচকে পুচকে ছেলেরা এত আয় করে আমরা কি করছি! আপনার আমার খেলার যোগ্যতা নেই বলেই আমরা দর্শক, ওরা খেলতে পারে বলেই ওরা খেলোয়াড়!
যত যাই হোক…বাংলাদেশ দলের পাশে ছিলাম…আছি এবং থাকব। আজীবন…
সাকিব, তামিম, ইমরুল, জুনায়েদ সহ সকল ১৫ বাংলাদেশী ক্রিকেটারদের পাশে থাকব সর্বক্ষণ…
বাংলাদেশ জিন্দাবাদ। আর একটা কথা সবাইকে বলতে চাই…
NEVER STOP BELIEVING…
20 replies on “বাংলাদেশী ক্রিকেট ভক্তদের কাছে খোলাচিঠি!”
উচ্চাকাংক্ষী বলবে কেনো তোমাকে? কোন উচ্চাকাংক্ষা দেখেছো?
১. সাকিবের বিকল্প কখনোই ছিলোনা এখনও নেই। সাকিব এখন পর্যন্ত অলটাইম বেস্ট অধিনায়ক। ওর হয়তো আরেক পরিণত হওয়া দরকার। কিন্তু ওর চাইতে ভালো অধিনায়ক বাংলাদেশে কোনোদিন ছিলোনা আর অদূর ভবিষ্যতে আসার সম্ভাবনা এখনো দেখিনা।
২. কালকে খারাপ খেলছে কারণ দল তেমন শক্তিশালি না। হোমওয়ার্ক করেনাই।
৩. আগের দুই খেলাতেও ভালো খেলে নাই।
৪. অপর দল খারাপ খেললেই বাংলাদেশ ভালো খেলে। এর ব্যতিক্রম খুবই কম।
১) সবাই তো সেটি বুজছে না…কেন তাহলে সাকিবের বাসাবাড়িতে ভাংচুর হইল?
২) হোমওয়ার্ক করেছে। কিন্তু ভাল খেলে নি…সাকিব এ সম্পর্কে বলেছিল “দিনটা আমাদের ছিল না” আমিও একই কথাই বলতে চাই…দিনটা আমাদের ছিল না।
৩) ভারতের বিপক্ষে ব্যাটিং এবং আয়ারল্যান্ডের সাথে বোলিং এ তারা ভাল খেলে নি? আমার তো মনে হয় তারা বেশ ভালৈ খেলেছিল।
৪) মানতে পারলাম না।
কালকে বাংলাদেশ পারফরম্যান্স দেখেই টি-২০ ওয়ার্ল্ড এর কথা মনে পড়ল যেখানে তারা প্র্যাকটিস না করে দাওয়াত খেয়ে ছিল এবং শপিং করেছিল। এদেরকে এই অভ্যাসগুলা ত্যাগ করতে হবে। মনে করছে আয়ারল্যান্ডকে হারিয়ে সব ম্যাচ ওরা জিতবে আরে বোকারদল একটু বুদ্ধু রাখ। সাকিব এর কথা শুনেই মনে হচ্ছিল সে গা বাচানোর জন্য সেখানে এসেছিল মানে সংবাদ সম্মেলনে।
এবারতো তেমন কিছু হয় নি। তারা যথাসাধ্য প্র্যাকটিস করেই মাঠে নেমেছিল।
করে নাই যে এর প্রমান গতবার ও দেখাইছিল ওরা প্র্যাকটিস করছে । কিন্তু ভিতরে যেয়ে দেখা গেছে এটা শুধু কয়েক ঘন্টার জন্য
এরা সবাই বেজন্মা!
হায়রে বাঙ্গালী!
তাই নাকি ? গুলি করে খতম করে দুঙ্গা !:twisted:
লেখার সাথে একমত
কিন্তু একটু আগে সাকিবের জন্য যে খোলা চিঠি পড়লাম তা দেখে কি ভাববো 😮
নিজের চোখেই দেখুন
http://www.banglanews24.com/detailsnews.php?nssl=c8c1efaca9730df9826ea5f5bd72d025
এইসব আজাইরা জায়গার আজাইরা জিনিসের প্রতি ছুটছেন কেন?
সম্ভবত এই ধরনের সাংবাদিকতাকে বলে ইয়েলো জার্নালিজম। সাবেক খেলোয়াররা কখনই এই মন্তব্য করবেনা। তবে হাতী কাদায় আটকালে পিপড়াও লাথি মারে হয়ত। প্রথম মেজর কাউন্টিতে সুযোগ পাওয়া খেলোয়ার সাকিব। আইপিএল এ বর্তমানে বাংলাদেশের একমাত্র প্রতিনিধিত্বকারী। অনেকেরই হয়ত ব্যাপারটা সহ্য হবেনা। এরকম তো জোকস আছেই যে দোযখে বাংলাদেশিদের জন্য পাহারাদার লাগেনা। কারন তারা নাকি একজন চায়না আরেকজনের উন্নতি হোক।
পুরো ব্যাপারটাই আমার কাছে ভন্ডামি মনে হল। সাবেক কোন খেলোয়াড় নিশ্চয়ই চোরের মত মন্তব্য করবে না।
But did he done something like that ( i mean what the writer written there?).
but thinking why this former cricket did not mention his name!
Ofcourse He Didn’t. If he did that the Popular Channels & Newspaper might publish it. But they didn’t. Its completely Fake!
তোমার কথা গুলো অনেক ভাল লেগেছে । আমি বাংলাদেশ ক্রিকেটের একজন বিশাল ভক্ত । পাশে আছি সব সময় ।
Saif,
See, our supporters are really tolerant. They never blame the cricket team for losing. Remember the first match? Everyone appreciated their fighting even though they (we) lost!
Didn’t you see how people managed the tickets? Even they faced tortures while collecting tickets. Many people bought tickets with extreme high price and huge pains! But don’t you feel their feelings when the team could not offer them a two hours playing? On the match against Ireland, we went to stadium at 11am. I do believe many people did same on the match against WI. How they would feel seeing such a shameless and irresponsible cricket? On that day there was very little chance of winning; people knew it. What people never knew it was that they will down the whole nation through a miserable play :(.
I better know our supporters rather than our cricketers. Last night I meet a university teacher at Rajshahi who remained about 2 days at home after such a shame losing as they told his fellow colleagues that Bangladesh will won against WI. He was shameful to show his face to his colleagues.
To me our cricketers (including the team management) are traitor. I do not blame their cricket, I just blame their responsibilities and professional attitude!
We even say ‘bravo’ seeing them losing but seeing they are play responsibly and with fighting attitude; same as did against India!
Sakib is my most favorite player in Bangladesh team ever. But I don’t agree with him. Days never come; you have to make the day for you!
Thanks
I do agree that they showed their irresponsibility on that match.
However its not our duty to kick & burn their placards,posters & festoons?
You can’t blame the cricketers. On the day of Kemar Roach (the hat trick bowler) & Sullieman Benn (The 6 Feet Player) every team can break. Maybe Bangladesh Broke Too Much & Never Had A Chance To Come Back. Besides, All Bangladeshi players are so young. They haven’t learn how to control that kind of situation still. But they’re trying to do that as I see.
I agree that. Days Never Come. You’ve to make it.
অনেক ধন্যবাদ এরকম একটি সুন্দর ও সময়োপযোগি লেখার জন্য।যারা এই লেখার সাথে একমত না আমার মনে হয় তারা বাংলাদেশ ক্রিকেট এর ভাল চায় না।
আপনার সাথে পুরা সহমত। আমরা কেন ভারত কে অনুসরণ করব, যারা দলের খারাপ সময় নেতিবাচক ভুমিকা রাখে। অনেকে বাংলাদেশ এর ফিরে আসার ব্যাপার এ সন্দিহান। ঠিক, ২০০৭ এ ভারত পাকিস্তান এর ব্যাপার এও তাই ছিল, তারা কি সেই বছর এ ২০ ২০ তে ফাইনাল খেলা দল না। তাদের কোনো সু্যোগ ছিল না, আমাদের এখন ও আছে, এখন ও শত আশা আছে।
এইটাই তো কেউ বুঝতে চাইছে না! 🙁
আজ দেখলাম অনেকেই সাকিব তামিমের পোস্টার ছিড়ছে..পুড়াচ্ছে..
দেখে মনটা খুব খারাপ হয়ে গেছে।
ক্রিকেট বিশ্বকাপটা হচ্ছে, ক্রিকেটারদের এস.এস.সি পরীক্ষা। এ পরীক্ষায় কোন একটা বিষয়ে খুব বেশী খারাপ করে ফেললে ফিরে আসার সুযোগ খুবই কম।
এ পরীক্ষার আগ পর্যন্ত যতো ভুলই করুক, ক্ষমা করে দেয়া যায়। শোধরানোর সুযোগ দেয়া যায়। পরীক্ষায় ভালো করার জন্য যাবতীয় লজিষ্টিক সাপোর্ট দেয়া যায়। এর পরও ছেলে যদি জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষায় গো-হারা হারে, আপনি বাপ হয়ে পিঠে হাত বুলিয়ে আপনার পরিবারের সবার মুখ হয়তো বন্ধ রাখতে পারবেন। কিন্তু সমাজের মুখ বন্ধ রাখবেন কি করে?
সাইফ ভাই, উপরের কমেন্টটি কিন্তু আমার নয়
প্রতিটি সাপ্তাহিক ছুটিতে যে লোকটি তার শিশুসন্তানকে দেখতে সারাদিন বাস জার্নি করে ঢাকা থেকে বাড়ী যায়, শুক্রবারে বাংলাদেশের খেলা দেখতে সে আজ প্রায় ১ মাস ধরে বাড়ী যাচ্ছে না- কি জানি, বাসে থাকাবস্থায় বাংলাদেশের খেলার অর্ধেকটা মিস হয়ে যায়! ঐ লোকটিকে আপনার এই টপিক পড়তে দিয়েছিলাম- প্রতিক্রিয়ায় তিনি যা বললেন, তাই আপলোড করলাম।
মন্তব্য করার মত রান করেনি তাই মন্তব্য ………..নাই!!!
http://www.sromobazar.com ভিজিট করুন চাকুরীর খবর জানুন।